সাগরে ইলিশ নেই, ফিরছে চাঁদপুরের জেলেরা : পদ্মা-মেঘনায়ও আকাল

স্টাফ রিপোর্টার

দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে মাছ ধরতে নেমেছিল জেলেরা। কিন্তু কিছুদিন ভালই চলছিল। ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা

পড়ছিল রুপালি ইলিশ। কিন্তু সেটা বেশি দিন টেকেনি। দেখা দিয়েছে আকাল। শত শত জেলে ট্রলার এখন

ভিড়ছে সাগরের তীরে। এদিকে চাঁদপুর থেকে যারা ভাটিতে গেছেন মাছ ধরতে তারা এখন একে একে ফিরতে

শুরু করেছে। সেখানেও দেখাা দিয়েছে ইলিশ সংকট। তাই বসে থেকে লাভ নেই। তাই ছুটছে সবাই চাঁদপুরের

দিকে। তবে ভরা মৌসুমেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ।

এতে পরিবার, পরিজন ও কিস্তির টাকা নিয়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত অসহায় জেলেরা।

তবে মৎস্য সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজনদের ধারণা, পানি প্রবাহ বৃদ্ধি ও প্রবল ধারায় বৃষ্টিপাত হলে নদীতে ইলিশ মাছের

বিচরণ বাড়বে।

সোমবার (২৯ আগস্ট) দিনব্যাপী হাইমচরের চরভৌরবী, সদরের হরিনাঘাট, লক্ষিপুরের বহরিয়া, পুরানবাজারের রোনাগোয়ালসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে জেলেদের জালে আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়তে

দেখা যায়নি।

জানা যায়, বছরের জুন-জুলাই ও আগস্ট ইলিশের ভরা মৌসুম। তাই অধিকাংশ জেলেরা ধারদেনা করে জাল,

জ্বালানি, লোকবল, নৌকা ও সরঞ্জামাদি নিয়ে নেমে পড়েন নদীতে। অথচ ভরা মৌসুম হলেও চাঁদপুরের পদ্মা-

মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। যে পরিমাণ ইলিশ পায় তা আবার আকারে ছোট

এবং পরিমাণের কম হওয়ায় জেলেদের জ্বালানি খরচও উঠে আসে না। এতে জেলেরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।

পোহাতে হচ্ছে পরিবার-পরিজন নিয়ে নানা সমস্যা। তাই সরকারের কাছে দ্রুত বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি

অসহায় জেলেদের।

চাঁদপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মানিক দেওয়ানসহ জেলেরা বলেন, আমরা একেকটা জেলে নৌকায় ১০-১২ জন করে নদীতে জাল নিয়ে নামি। সারাদিন জাল বেয়ে ২ হাজার

টাকারও ইলিশ পাই না। যে ইলিশ পাই তা বিক্রি করে আমাদের খরচ তো দূরে, নৌকার তেল খরচও উঠেনা।

আমরা খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছি, যা দেখার কেউ নেই।

তারা জানান, ২২ দিনের অভিযান ও মা ইলিশের অভিযান ছাড়াও নদীতে নামলে প্রায়ই হয়রানি হতে হয়।

সরকারের কাছে দাবী, মাছই যখন নদীতে নাই। তাহলে আর আমাদের হয়রানি করে কি লাভ। বরং আমাদের

বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিক আমরা আর নদীতে জাল ফেলবো না।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, জেলেদের হতাশ হওয়ার

প্রয়োজন নেই। নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি ও প্রবল ধারায় বৃষ্টিপাত হলে জেলেদের জালে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ

ধরা পরবে বলে আশা করছি। তাছাড়া চাঁদপুর জেলায় ৪ হাজার ৩৫ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। যাদেরকে

অভিযান সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রকল্পে চাল, গবাদি পশু, সেলাই মেশিন, ভ্যান

গাড়ি দিয়ে থাকি। এরমধ্যে মৃত এবং অপেশাদার জেলেদের চিহ্নিত করে আমরা প্রকৃত পেশাদার জেলেদের

 

হালনাগাদ করে সরকারি সুযোগ সুবিধার আওতায় আনার কার্যক্রম চলমান রেখেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *