স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের গুরু দায়িত্ব ও কর্তব্য

প্রতিনিধিত্বপূর্ণ সমাজব্যবস্থা একটি সভ্যসমাজের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য। আর তাই আল্লাহ প্রতিনিধিত্বপূর্ণ সমাজ দিয়েই পৃথিবীতে মানবসভ্যতার সূচনা করেছিলেন। মানবজাতির আদি পিতা হজরত আদম (আ.) ছিলেন মানবজাতির প্রথম প্রতিনিধি এবং তিনি ছিলেন প্রথম নবী। যুগে যুগে আল্লাহ মানবগোষ্ঠীর সর্বোত্তম চারিত্রিক গুণাবলির অধিকারী ব্যক্তিকে ওই সমাজের প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব দিয়ে নবী ও রাসুল হিসেবে পাঠিয়েছেন।

জনপ্রতিনিধি একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর সার্বিক কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব বহন করেন। অর্থাৎ জনপ্রতিনিধির যোগ্যতা, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার ওপর নির্ভর করে কোনো সমাজ ও জাতির ভবিষ্যৎ নির্মিত হয়। সুতরাং জনপ্রতিনিধির বৈশিষ্ট্যগুণে যেমন একটি সমাজ ইতিহাসের স্বর্ণচূড়ায় আরোহণ করতে পারে, তেমনি তার ব্যর্থতা একটি সমাজকে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করতে পারে।
জনপ্রতিনিধির মাধম্যে তার নির্বাচনী এলাকার ও সেখানে বসবাসকারী জনগণের কল্যাণে প্রয়োনীয় সরকারি-বেসরকারি সহায়তা ও অনুদান এসে থাকে। সুতরাং জনপ্রতিনিধি যদি আমানতদার না হয়, তাহলে জনগণ বঞ্চিত হবে, এলাকার উন্নয়ন কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে হবে না। তাই জনপ্রতিনিধির মধ্যে আমানতদারি থাকা আবশ্যক। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন যে তোমরা আমানতকে তার উপযুক্ত প্রাপকের কাছে পৌঁছিয়ে দেবে। আর মানুষের মাঝে যখন কোনো বিষয়ে বিচার-ফয়সালা করবে, তখন অবশ্যই ইনসাফের ভিত্তিতে তা করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন। আল্লাহ সব কিছু শোনেন ও দেখেন।

জনপ্রতিনিধির জনদরদী হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ যে জনপ্রতিনিধিত্ব করবে, তার মধ্যে যদি জনতার প্রতি ভালোবাসা না থাকে, জনগণের সঙ্গে যদি তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক না থাকে, তাহলে তার দ্বারা জনগণের স্বার্থ রক্ষা সম্ভব নয়। একমাত্র ভালোবাসর মাধ্যমেই জনপ্রতিনিধির পক্ষে এলাকার জনগণ ও আল্লাহর প্রিয় ও আস্থাভাজন হয়ে ওঠা সম্ভব। রাসূল (স.) বলেছেন, অনুগ্রহ ও দয়াবানদের ওপর দয়াময় আল্লাহ দয়া ও অনুগ্রহ বর্ষণ করেন। সুতরাং জমিনের অধিবাসীদের ওপর তোমরা দয়া করো, তাহলে আসমানওয়ালা (আল্লাহ) তোমাদের ওপর দয়া করবেন।

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *