সড়কে নিরাপত্তা আরো জোরদার করতে হবে

কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। উল্টো গত তিন বছরে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও মৃত্যু- দুটোই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে জানা যায়, দুই মাসে সড়কে দিনে গড়ে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। দেশের শীর্ষ সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংগঠনটি।
গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ৮৪৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১২ জন নিহত এবং ১ হাজার ১৪৬ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৪৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫৪৩ জন। ফেব্রুয়ারিতে ৪১৭টি দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত হন। অর্থাৎ দুই মাসে প্রতিদিন গড়ে প্রাণ গেছে ১৭.১৫ জনের। দুর্ঘটনা রোধে ১০ দফা সুপারিশ জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনা রোধে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে। চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা করতে হবে নির্দিষ্ট। বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী এবং পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশে কী কী কারণে এত বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, কী কী পদক্ষেপ নিলে দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা সম্ভব- এসবও বহুল আলোচিত বিষয়। অনেক গবেষণা হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ আছে। আমরা মনে করি যতক্ষণ না পর্যন্ত সরকার এটা উপলব্ধি করছে যে, এটা একটা গুরুতর জাতীয় সমস্যা ততক্ষণ পর্যন্ত এর কোনো সুরাহা হবে না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সরকার একশ্রেণির পরিবহন নেতা ও মালিকের কাছে যতটা দায়বদ্ধ, ততটা দায়বদ্ধ সড়কে নিরাপত্তার ব্যাপারে নয়, জনগণের কাছে নয়। এটা হতাশাময়, মর্মান্তিক এবং নিষ্ঠুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *