হাইমচরে সোনালী আঁশ সংগ্রহে ব্যস্ত কৃষক

হাইমচরে চলতি মৌসুমে উপজেলার পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাঁসির ঝিলিক।

বুধবার(১৮ আগস্ট) দিনভর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সময় মত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দিতে পেরেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক। তারা পাট কেটে নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং হাটে বাজারে তা বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহণে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলমান

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার হাইমচর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকায় অনেক স্থানে চাষ কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকরা খুশি ।
উপজেলার বাজারগুলোতে বর্তমানে ভালো মানের পাটের মূল্য তিন হাজার টাকা মণ ও নিম্ন মানের পাটের মূল্য প্রায় ২৮শ’ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ফলে ন্যায্য মূল্য পেয়ে পাট চাষীদের মাঝে এখন চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে।

উপজেলার পাড়া বগুলা গ্রামের কৃষক মোঃ মজিবর আলী জানান, ১০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছিলাম ফলনও ভালো হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে না।
উপজেলার মাঝের চরের কৃষক মোঃ আব্দুস ছামাদ জানান, ‘মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে পরবর্তীতে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফলন ভালো হয়েছে। এবার আমি ১২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। বাজারে পাটের মূল্য বেশি হওয়ার কারণে আগামি বছর আরো বেশি জমিতে পাট চাষ করবো বলে আশা রাখছি।’

এ বিষয়ে হাইমচর উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় আমাদের এলাকায় পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। পাট চাষের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা। আশা করছি তারা পাট চাষে বাম্পার ফলন পাবে। এলাকার কৃষকরা যেন পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারে এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারে এ জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের নিকট গিয়ে পরামর্শ প্রদান করছি। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমান ঔষধ প্রয়োগের পরামর্শ দিয়ে আসছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দেবব্রত সরকার জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। তবে এখানকার কৃষক পাট জাতীয় ফসল কেনাফ চাষে সফলতা পাচ্ছেন বলেন এর প্রতি ঝুঁকছেন বেশি। এবছর কেনাফ চাষ হয়েছে ৪শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে। পাটের চেয়ে কেনাফের ফলনও অধিক মাত্রায় ভালো হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম ও অনেক বেশি। পাট ও কেনাফের ন্যায্য মূল্য পেলে চাষিদের চাষাবাদে আগ্রহ বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।

হাইমচর প্রতিনিধি, আগস্ট ২০২১;

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *