হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় একমাত্র খালের কালভার্ট বন্ধ হওয়ায় অন্তত ৭০ একর কৃষি জমির মাঠ গত ৫ বছর ধরে পানিবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। যে কারনে এখানকার প্রান্ত্রিক কৃষক ও জমির মালিকরা চাষাবাদ বা ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাছ চাষ পর্যন্ত করতে পারছে না। সমাধানের লক্ষ্যে কেউ এগিয়ে না আসায় এভাবে পড়ে আছে গত কয়েক বছর ধরে। আর এ চিত্র উপজেলা ও পৌরসভার নিকটে হওয়া সত্বেও যেন দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ৭ নং ওয়ার্ড বদরপুর উত্তর মাঠ ও উপজেলার ৮নং হাটিলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বলিয়া গ্রামের পশ্চিম মাঠে প্রায় ৭০ একর আবাদি জমি চাষাবাদ করতে পারছে না পানিবন্ধীর কারনে।
এর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, গত প্রায় ৫ বছর পূর্বে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ১৩৩ কেভি গ্রিড বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণের কারনে বলিয়া বদরপুর কৃষি মাঠের একমাত্র পানি চলাচলের হাজীগঞ্জ কচুয়া সড়কের উপর কালভাটটি বন্ধ হয়ে যায়।
উক্ত স্থানে বিকল্প পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করার ফলে উক্ত কৃষি মাঠের প্রায় ৭০ একর আবাদি জমি পানিবন্দি অবস্থায় বছরের পর বছর অতিবাহিত হয়ে আসছে। আর এ বিষয়ে কোনভাবে দায়ভার নিতে নারাজ চাঁদপুর পল্লী বিদ্যৎ সমিতি-১।
পানিবন্দি মাঠের জমির মালিক ও কৃষক কাঞ্চন হাজী, আবুল কালাম, আ. ছাত্তার, বাচ্ছু মিয়া, বাহাদুর গাজী, দেলু মিয়া, এমরান হোসেন, মিজান ও শাহিনুর রহমান শাহীন বলেন, পৌরসভার বদরপুর কৃষি মাঠে শতাধিক কৃষকের ৭০ একর কৃষি জমিন অনাআবাদি অবস্থায় গত ৫ বছর ধরে পড়ে আছে। অথচ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেন একটি জমিও অনাআবাদি অবস্থায় পড়ে না থাকে সেই দিকে নজর দিতে। আমরা এ মাঠে কোন প্রকার চাষাবাদ বা রবি শষ্যের আবাদ করতে পারছি না পানিবন্দির কারনে। বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র স্থাপন করে তারা কালভাটের মূখ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা পানি নিস্কাশনের কোন সুরাহ পাচ্ছি না। এভাবে পড়ে থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
কৃষকদের পক্ষ হয়ে এগিয়ে এসে আওয়ামী লীগ নেতা বতু মিয়া বলেন, পৌরসভার মেয়রের দৃষ্টি গোচরে নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ইতিমধ্যে ভ্যাকু দিয়ে পানি নিষ্কাশনের উদ্যাগ নিলে তা আবার বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় কাউন্সিলর মনির হোসেন কাজী বলেন, কৃষকদের আবেদনের পেক্ষিতে আমরা পৌরসভা থেকে ভ্যাকু এনে খাল খননের চেষ্টা করি। কিন্তু কালভাটের তুলনায় গর্ত বেশী হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ দেখা দিয়েছে। যে কারনে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির লোকজন ও স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে মঙ্গলবার সকালে পরিদর্শন করেছি।
চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম ওমর আলী বলেন, কৃষকদের চাষাবাদে আমাদের পক্ষ থেকে কোন বাধাঁ নেই তবে ৩৩ হাজার মেগোওয়াড বিদ্যু কেন্দ্রের যেন ক্ষতি না হয় সেই দিকটাও ভাবতে হবে।
এ বিষয়ের সমাধানের প্রশ্নে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর জিএম, হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা প্রশাসন থেকে সঠিক কোন উত্তর খুঁজে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।