ব্যাপক চাহিদা থাকলেও হাইমচরে বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ

শাহ আলম মিজী চাঁদপুর জেলায় একযু আগেও শীতের মৌসুমে সকালে রসের হাড়ি নিয়ে রস আছে রস বলে ডাকতো,তখন ৫কেজি রস বিক্রি হতো ১২০থেকে ১৫০ টাকা।
গ্রামে সকাল দুপুরে দেখা যেত গাছিরা খেজুর গাছ কাটার সরঞ্জামসহ হাড়ি টানানো,রস নামানো কত ব্যস্ততার দৃশ্য চোখে পড়ত।শীতের মৌসুম শুরু হতেই বাড়ি বাড়ি চলত খেজুরের রস কিংবা রসের পাটালি গুড় দিয়ে মজাদার পিঠা-পুলির আয়োজন।

পাশাপাশি খেজুরের রস দিয়ে তৈরি ঝোলা গুড়ের সুনাম তো ছিলই। তবে গ্রামবাংলার সেই দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়ে না।কালের বিবর্তনে যেন ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এসব অনুষঙ্গ।নানাবিধ কারণেই গ্রামের মানুষ যেন ভুলতে বসেছে এসব ঐতিহ্যবাহী উপাদান।

হাইমচর উপজেলার উঃআলগী গ্রামে বেড়াতে আসা মিসেস হোসনেয়া বলেন,আমারা ঢাকা শহর থেকে ডিসেম্বরে বাপের বাড়িতে পরিবারের সকলে বেড়াতে আসি।সকালে আতপচাউল দিয়ে গরম গরম রসের নাস্তা খেতাম,এখনও প্রতিদিন খেতে ইচ্ছে করছে।আজ ৪/৫ দিন গ্রামে এলাম ভাইকে দিয়ে অনেক চেষ্টার পর একদিন খেয়েছি(সেই স্বাদ এখন আর নেই)ছেলে মেয়েরা রসের গল্প গুনেছ তাই ওদের রস খাওয়াতে গ্রামে নিয়ে আসা।
হাইমচর উপজেলার চরপোড়ামূখী গ্রামের সেলিম গাজী কে জিগ্যাসা করলে তিনি বলে,আমার এখনও ১০’টা গাছ আছে,গাছ কাটার গাছি পাওয়া যায় না।নিজে তিন-চারটা কেটেছি সপ্তাহে ৪দিন ২০/২৫কেজি রস পাই,চাহিদা অনেক বেশী,প্রতি কেজি রস এখন হাইমচরে ১৩০/১৫০টাকা করে।

এতটা দাম হওয়ার কারণ সম্পর্কে জিগ্যেস করলে সেলিম গাজী বলেন,গাছের সংখ্যা প্রতিবছর কমছে।গাছ কম হওয়ায় গাছিরা ধীরেধীরে রস গাছ ছোলার কাজ ছেড়ে দিয়েছে।তাই গাছি পাওয়া দুষ্কর হয়ে গেছে।

গ্রামের শীতের রস এর ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে আমাদের বাড়ির আঙ্গিনায়,রাস্তার পাষে,কৃষি জমির আতাইলে বিভিন্ন ভাবে খেজুর গাছ লাগানো প্রয়োজন।খেজুর গাছ ছোলার ডিজিটাল মেশিন আবিষ্কার হলে কাজটা সহজ হয়ে যেতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *