চাঁদপুরে আলু চাষিদের মাথায় হাত : বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে চাঁদপুরে কৃষকদের মাথায় হাত। অনেক আশা নিয়ে এবার যারা শীতকালীন শবজি চাষ করেছেন তারা পড়েছেন দারুন বিপাকে। অসময়ের টানা বৃষ্টিতে অধিকাংশ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে আলু চাষিদের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আলু অতি লাভজনক হওয়ার কারণে এবছর অনেকেই আলু চাষের দিকে ঝুঁকেছে।

কিন্তু গত দুই দিনের অনাবৃষ্টিতে আলুর ফসলি মাঠে পানি জমে গেছে। ফলে যেসব জমিতে পানি জমেছে ঐসব জমির আলু হবে না। আলুর উৎপাদন কিছুটা হলেও দ্রুত পচন ধরবে বলে মনেকরছেন চাষিরা।

চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার কৃষকেরা সবেমাত্র চাষ শুরু করেছিলেন। তবে এই সময় ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের ফলে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে মতলব দক্ষিণে আলু চাষে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।

দেশের অন্যতম আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া এবং চাঁদপুর সদরের বিস্তীর্ণ জমিতে আলুর চাষ হয়ে থাকে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। সবেমাত্র আলুবীজ রোপণ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের ফলে নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে আলুবীজ বৃষ্টির পানিতে ডুবে এখন পচনের মুখে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

নওগাঁও গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর শেখ জানান, আমি সবেমাত্র এক একর জমিতে আলুবীজ রোপণ করেছি আরো পাঁচ একর জমিতে আলুবীজ রোপন করব, এর মাঝেই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে নিম্নচাপে সৃষ্টি হয়ে সারা দেশের ন্যায় মতলবেও বৃষ্টি হচ্ছে, যার ফলে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আলুবীজ বৃষ্টির পানিতে ডুবে এখন পচনের মুখে। আলুর বীজ পচে নষ্ট হয়ে গেলে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাকে।
তিনি আরো জানান, সকল কৃষক জমিতে সার এবং কীটনাশক দিয়ে আলুবীজ রোপণের জন্য প্রস্তুত করে রাখে, বৃষ্টির কারণে প্রস্তুতকৃত জমি নষ্ট হয়ে যায় ক্ষতির মুখে পড়ে সফল কৃষক।

অপর দিকে আলুর উৎপাদন ব্যহত হলে আলুর দাম কোথায় গিয়ে ঠেকে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গত বছর আলুর দাম সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার থেকে কৃষকরা আবারো আলু চাষে মনোযোগী হয়। ফলে সবাই আশায় বুক বেধেছিল এবছর পেছনের সকল ঘাটতি পুসিয়ে নেবে। কিন্তু ঘুর্নিঝড়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টি হওয়ার কারণে কৃষকদের সেই আশায় গুড়েবালি। ফসলি জমির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মাঠকে মাঠ ফসলি জমি এখন পানির নিচে রয়েছে। এর মধ্যে যেসব ফসল এখনই ঘরে তোলার সময় হয়েছে সেইসব ফলও ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে কৃষকদেরকে।

কৃষকরা মনেকরেন এমনিতেই সার ও বীজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে লাভের পরিমান আগের মতো নেই। তারপরও কৃষি বিভাগ কিছু অনুদান দিয়ে সার ও বিজ দিয়ে এবছর সহযোগীতা করেছে। এতে কৃষকদের উপকার হয়েছে। কিন্তু যে আশা নিয়ে বীজ বপণ করেছে তা যেন জলেই ভেগে যাচ্ছে।

এদিকে অসময়ের এ্ই বৃষ্টিতে শীতকালীণ সক্যল ধরনের সবজিরই ক্ষতি হবে বলে মনেকরছেন কৃষকরা। চাঁদপুর সদরের মহামায়া এলাকার আবু ইউসুফ সাংবাদিকদের জানান এই মওসুমে সবজির ভালই ফলন হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আমাদের মনেহয় সব শেষ হয়ে যাবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের মোক্তার হোসেন বলেন, এই বছর অনেক আশা নিয়া আলু ক্ষেতি করলাম। কিন্তু বৃষ্টির কারণে আলু একদম শেষ। এই ক্ষতি কেমনে পুষিয়ে উঠবো তা ভাবতে পারছি না।

অনাবৃষ্টির কারণে শীতকালীন সব ধরনের শাকসবজিরই ক্ষতি হবে হচ্ছে। এতে এ মওসুমে সব ধরনের শাক সবজির দাম আকাশচুম্বি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন অনাকাঙ্খিত ক্ষতি পুষিয়ে উঠার জন্য চাঁদপুরের কৃষি বিভাগকে এগিয়ে আসার জন্য আহবান ্জানিয়েছেন কৃষকরা।

স্টাফ করেসপন্ডেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *